Header Ads

Effects Of Nosocomial Infection in Bangladesh

গত লেখায় আমরা হাসপাতালে কি কি ধরনের অনুজীব থাকতে পারে এবং আমরা কিভাবে তাদের দ্বারা আক্রান্ত হই তা আমরা জেনেছি।যারা লেখাটি পড়েন নি তাদের জন্য লিংকঃ Microbes in the hospital

এই লেখায় আমাদের বাংলাদেশে এই Nosocomial Infection এর প্রভাব আমরা দেখবো।



হাসপাতাল থেকে যে ইনফেকশন ছড়ায় তাকেই সাধারনত Nosocomial Infection বলা হয়।এই ইনফেকশন সাধারণত দক্ষিন-পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে বেশি দেখা যায় ( শতকরা ১১.৮ %) যেখানে ইউরোপে এর পরিসংখ্যান হচ্ছে মাত্র ৭.৭ % ।বাংলাদেশের জন্য এই ডাটা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়।তবে বিভিন্ন পরিসংখ্যানে বিভিন্ন পরিমানের কথা বলা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে তৃতীয় বিশ্বে এই ইনফেকশনের মাত্রা ৬.৫ থেকে ৩৩ ভাগ পর্যন্ত। তবে আশংকার বিষয় হচ্ছে এই মাত্রা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে।২০০৭-২০০৮ পর্যন্ত ICDDR B  পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ,একজন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার মাত্র ৭২ ঘন্টার মধ্যেই রোগী রি ইনফেকশন দ্বারা আক্রান্ত হন যার প্রধান কারন একটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে ৫০ জন রোগীর অবস্থান এবং তারা Acute বা Chronic রোগাক্রান্ত।
ICDDR B পরিচালিত এই রিসার্চ এ প্রায় ৪৬,২৭৩ জন রোগীর উপর পরীক্ষা চালানো হয়েছিল।যেখানে দেখা গেছে ,ওয়ার্ডের রোগীদের কেবিনের রোগী অপেক্ষা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।শতকরা ২৫ ভাগ পর্যন্ত শ্বাসযন্ত্রের ইনফেকশন হাসপাতাল থেকে ছড়ায় যেখানে মূলত Chronic রোগীরা রোগ ছড়ানোর জন্য দায়ী থাকেন।শুধু যে রোগীদের মধ্যেই এই ইনফেকশন ছড়ায় এমন নয়,বরং হাসপাতাল গুলোতে যারা কাজ করেন তাদের মধ্যেও এই ইনফেকশন ছড়ায়।২২৬ জন হেলথ ওয়ার্কারের মধ্যে পরিচালিত পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে ২৭ ভাগ ওয়ার্কার শ্বাসযন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হন,৬-২৪ ভাগ অন্যন্য বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন।

বাংলাদেশ মেডিকেল জার্নাল পরিচালিত ২০০৯ সালের একটি গবেষনায় দেখা গিয়েছে অপারেশন পরবর্তী সময়ে শতকরা ৪৯ ভাগ রোগী ইনফেকশনে আক্রান্ত হন।গ্রাম পজিটিভ এবং গ্রাম নেগিটিভ উভয় ব্যাকটেরিয়া এখানে ভূমিকা পালন করে।অপারেশন পরবর্তী সময়ে আক্রান্তদের মধ্যে অনুজীবের শতকরা অবস্থান E.coli (৩৭.৫%) ,S. aureus (২১.৭% ), Pseudomonas sp. (১৫.১%) ,Streptococcuus sp.(৮.৪%) ।
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই ইনফেকশনের প্রবনতা আরো বেশী ।অধিকাংশ গ্রাম নেগেটিভ এক্ষেত্রে দায়ী হয়ে থাকে।Pseudomonas sp.(36.9%),E.coli (21.9%) , Proteus sp. (21.6%) , Klebsiella sp. (9.5%) অনুজীবগুলো ডায়াবেটিস আক্রান্তদের ক্ষেত্রে প্রধান কারন হয়ে থাকে।

এবার রোগের দিকে তাকালে দেখতে পারি,বিভিন্ন রোগকালীন সময়ে এই ইনফেকশনের আক্রমন ভিন্ন ভিন্ন।১০২ জন রোগীর মধ্যে চালানো এই গবেষনায় ৭৪ জন (৪৮.৭% ) অপারেশন পরবর্তী সময়ে, ১৬ জন (১০.৫%) ক্যাথেটার ইনফেকশন এবং বাকি ১২ জন (৭.৯ %) আক্রান্ত রোগী এই ইনফেকশন দ্বারা আক্রান্ত হন। অপারেশন পরবর্তী রোগীদের মধ্যে শ্রোনী বা হাড়ের রোগীদের প্রাইয় ৩৪%, সিজেরিয়ান ১৭.৭ %,এপেনডিক্স ১৪.১৫ % বেশি আক্রান্ত হন।এছাড়াও বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহতদের একটি বড় অংশ এই ইনফেকশন দ্বারা আক্রান্ত হন যা অনেক ক্ষেত্রে তাদের অঙ্গহানির কারনও হতে পারে।

এই প্রতিবেদন গুলো অনেক আগের বিধায় এখন এই আক্রান্তের পরিমান আরো বেশি হতে পারে।সময়ের সাথে সাথে আমরা সচেতন হলেও ঠিক ততটা সচেতন আমরা হতে পারে নি। এই ইনফেকশন রোধ করার জন্য অপারেশন পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে ।অকারনে এইসব এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করায় কমে যাচ্ছে এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সি। পরবর্তী পর্বে Nosocomial Infection এর কারনে বিভিন্ন এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার ও তাদের রেজিস্টেন্সি নিয়ে আলোচনা করা হবে।

রেফারেন্সঃ
icddr b News
https://www.hsmdghs-bd.org/Hospital%20Acquired%20Infection.htm
https://www.banglajol.info/index.php/BMJ/article/view/3576
https://www.google.com/url?sa=t&rct=j&q=&esrc=s&source=web&cd=9&cad=rja&uact=8&ved=0ahUKEwjnntr8saPYAhUImpQKHWiiCnwQFghhMAg&url=http%3A%2F%2Farticle.sciencepublishinggroup.com%2Fpdf%2F10.11648.j.ijidt.20170202.12.pdf&usg=AOvVaw3iQnZPvrzhkRwfLVzCWFL5

লেখকঃ
Maksudur Rahman Shihab
Department of Microbiology,Jagannath University

No comments

Powered by Blogger.